বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

নবীজির ভালোবাসা -ইমদাদ ফয়েজী প্রকাশ

নবীজির ভালোবাসা
আরবের মরু প্রান্তর

অনেক অনেক দিন আগে, আরবের মক্কা নগরে জন্ম নিলেন এক শিশু। তিনি বড় হলেন অনাথ হয়ে। তার বাবা ছিলেন না, মা-ও ছোটবেলায় মারা যান। কিন্তু দুঃখের মধ্যেও এই শিশুটি কখনো মিথ্যা বলেননি, কখনো কারো ক্ষতি করেননি।

সব উত্তম চরিত্রে সুসজ্জিত ছিলেন তিনি। এমনকি তিনি নবী হওয়ার আগেও সবাই তাকে আল-আমিন অর্থাৎ সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য মানুষ হিসেবে ডাকত। হ্যাঁ বন্ধুরা, এই শিশুই হচ্ছেন আমাদের নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

নবীজি (সা.) আল্লাহর পাঠানো শেষ রাসুল। তিনি এসেছিলেন গোটা জগদ্বাসীকে আলোর পথ দেখাতে। পাপাচার–অনাচার থেকে মুক্ত করে জান্নাতি মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে। ঐশী আলোয় উদ্ভাসিত নতুন এক পৃথিবী আমাদের উপহার দিতে। তিনি শিখিয়েছেন—আল্লাহ এক, শুধু তাঁর ইবাদত করতে হবে। সত্য কথা বলতে হবে। মানুষের সঙ্গে উত্তম আচরণ করতে হবে। ভালো কাজে একে অন্যকে সাহায্য করতে হবে। ছোটদের দয়া করতে হবে, বড়দের সম্মান করতে হবে। অসহায়-দুর্বলদের প্রতি সদয় হতে হবে।

ছোট্ট করে একটি ঘটনা বলি, এক বৃদ্ধ নারী নবীজির আসা-যাওয়ার পথে প্রতিদিন কাঁটা-আবর্জনা ফেলে রাখতেন। যাতে নবীজির চলাফেরায় কষ্ট হয়। একদিন এর ব্যতিক্রম হলো। নবীজি (সা.) রাস্তায় এরূপ কিছু না পেয়ে তার খোঁজ নিতে গিয়ে দেখলেন ওই নারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। নবীজি তাকে পানি পান করালেন, সেবাযত্ন করলেন। তিনি অবাক হয়ে বললেন, ‘এমন মানুষ আল্লাহর প্রেরিত নবী ছাড়া আর কেউ হতে পারেন না।’ বন্ধুরা, দেখো, শত্রুতার জবাব তিনি শত্রুতা দিয়ে দেননি, দিয়েছেন ভালোবাসা দিয়ে।

নবীজি (সা.) আমাদের বলে দিয়েছেন, ‘যে ছোটদের প্রতি দয়া করে না, বড়দের সম্মান করে না, সে আমার উম্মত নয়।’ নবীজি (সা.) আরো বলেছেন, ‘... যে তোমার ওপর জুলুম করে, তুমি তাকে ক্ষমা করো, যে তোমার ক্ষতি করে, তুমি তার উপকার করো।’

বন্ধুরা, আমরা যদি সত্যিই নবীজি (সা.)-কে ভালোবাসি, তবে শুধু মুখে বললেই হবে না। আমাদের নিয়মিত নামাজ পড়তে হবে। সত্য কথা বলতে হবে এবং সব মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। মা-বাবা, শিক্ষক ও বড়দের মেনে চলতে হবে। প্রতিবেশী, আত্মীয় ও অভাবগ্রস্ত মানুষের বিপদে-আপদে পাশে থাকতে হবে। কারো ক্ষতি করা যাবে না; বরং সাধ্যমতো সবার উপকার করতে হবে। মহান আল্লাহ কোরআনে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর জীবনে রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ।’

বন্ধুরা, এসো আমরা প্রতিজ্ঞা করি—আমরা নবীজি (সা.)-কে সত্যিকার অর্থেই ভালোবাসব, তাঁর শিক্ষা মেনে চলব, তাঁকে আমাদের একমাত্র আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করব। আমাদের জন্য তাঁর রেখে যাওয়া দুটি মূল্যবান সম্পদ—মহাগ্রন্থ আল-কোরআন এবং তাঁর সুন্নাহ পুরোপুরি অনুসরণ করার মাধ্যমে নবীজির প্রিয়জন আর মহান রবের প্রিয় বান্দা হয়ে উঠব।

মানবতার কল্যাণে আমাদের উদ্যোগে অংশ নিতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

Share:

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আসসালামু আলাইকুম

কর্জে হাসানার ফজিলত

সদস্য হতে ক্লিক করুন

আপনার আখেরাত